Monday, 27 January 2014

জেনে নিন “কখন” জন্মবিরতিকরণ পিল ডেকে আনে বিপদ

জন্মবিরতিকরণ পিলসারা পৃথিবীতে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সফল পদ্ধতি হলো জন্মবিরতিকরণ পিল। এই পিলগুলো মূলত ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন নামক দুইটি হরমোনের বিভিন্ন অনুপাতের সংমিশ্রন। এইসব সমন্বিত পিলের জন্মনিয়ন্ত্রণের সাফল্যও খুব বেশি, শতকরা প্রায় ৯৮ শতাংশের কাছাকাছি। জন্মনিয়ন্ত্রণ ছাড়াও মেয়েদের বিভিন্ন রোগে (যেমনঃ স্তনের বিভিন্ন নন-ক্যান্সারাস টিউমার, অনিয়মিত মাসিক, ডিম্বাশয়ের টিউমার বা সিস্ট, অস্বাভাবিক গর্ভধারণ ইত্যাদি) ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এসব পিল। কিন্তু তারপরও প্রতিটি ঔষধের যেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, আর শরীরের অনেক অবস্থাতেই খাওয়া যায় না অনেক ঔষধ- জন্মনিয়ন্ত্রক পিলও তার ব্যতিক্রম নয়
তাই নব-দম্পতি বা যে কেউই যদি পরিবার পরিকল্পনার জন্য ডাক্তারের কাছে যান, তবে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু জিনিসের কথা ডাক্তারকে জানাতে ভুলবেন না।

যেসব অবস্থায় জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধঃ

ক্যান্সার-
বিশেষত স্তন কিংবা যৌনাঙ্গের ক্যান্সার হলে। গর্ভাশয় বা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। কারণ ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন সমন্বিত পিল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
যকৃতের কোন অসুখ-
আপনার লিভারে কোন অসুখ থাকলে বা পূর্বে হেপাটাইটিস বি বা সি হওয়ার কোন ইতিহাস থাকলে তা অবশ্যই ডাক্তারকে জানান। আপনার লিভারে পূর্বে কোন অপারেশন হয়ে থাকলে তাও জানিয়ে নিন ডাক্তারকে।
হৃদরোগ-
বিভিন্ন হৃদরোগে জন্মবিরতিকরণ পিল নিষিদ্ধ বলে চিকিৎসকেরা মনে করেন। এর মাঝে রয়েছে থ্রম্বোএমবলিজম (রক্তনালিকায় কোন কিছু জমে নালী বন্ধ হয়ে যায়)। বিভিন্ন থ্রম্বোএমবলিক ডিজঅর্ডারের মাঝে রয়েছে স্ট্রোক, হার্টে বা আর্টারিতে কোন ব্লক থাকা ইত্যাদি। তাই হৃদরোগের কোন চিকিৎসা নিয়ে থাকলেই সেটা পরামর্শ নেবার সময় ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন।
রক্তে লিপিডের মাত্রা-
ইস্ট্রোজেন সব সময়ই রক্তে লিপিডের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের অনেক আগে থেকেই রক্তে লিপিডের পরিমান বেশি, জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়ার আগে তাদের জন্য বাড়তি সচেতনতা জরুরি। বিশেষত যাদের শরীরে জন্মগতভাবেই লিপিডের মাত্রা উচ্চ- তাদের জন্য এইসব পিল একেবারেই নিষিদ্ধ।
অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ-
যদি আপনার যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ/ রক্তস্রাব হয় এবং তার কারণ না জানা যায়, তবে এর চিকিৎসা হওয়ার আগ পর্যন্ত জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়া অনুচিত।

যেসব সমস্যার সময় পিল খেলেও ডাক্তারের বিশেষ নজরদারি জরুরি-

চল্লিশোর্ধ নারী-
জন্মবিরতিকরণ পিল মূলত তরুণীদের জন্য উপযোগী। তাই চল্লিশোর্ধ কেউ যদি জন্মনিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান, তবে অবশ্যই তার উচিৎ ডাক্তারের সাথে নিয়মত যোগাযোগ রাখা। কারণ এ বয়সের পরে নারীদের শরীরে হরমোনের নানা ধরণের পরিবর্তন আসে এবং শরীরও দুর্বল হতে থাকে। মেনোপজের সময় এগিয়ে আসার সাথে সাথে হাড়ক্ষয় ও হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে এ বয়স থেকেই।
ধূমপায়ী পঁয়ত্রিশোর্ধ নারী-
যখন একজন নারী ধূমপায়ী হন বা মদে আসক্ত হন তখন তিনি অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার শিকার থাকেন। শুধুমাত্র অভিজাত সমাজে নয়, অনেক দরিদ্র ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজেও নারীদের ধূমপান করতে দেখা যায়। এসব ধূমপায়ী নারীদের জন্মবিরতিকরণ পিল খেতে দেওয়ার আগে ডাক্তার ও রোগী উভয়কেই সচেতন হতে হবে।
স্তন্যদানকারী নারী-
যদিও ডাক্তাররা বলে থাকেন, বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে বাচ্চা জন্ম হবার প্রথম ছয় মাসে নারীদের গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা কম থাকে। তবুও অনেকে ঝুঁকি এড়াতে এ সময় জন্মবিরতিকরণ পিল ব্যবহার করার পক্ষপাতি। তবে অনেকেই জানেন না যে পিলের উপাদান ইস্ট্রোজেন মায়ের দুধের পরিমান কমিয়ে দেয়, ফলে শিশু খেতে পায় না। তাই স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য রয়েছে শুধু প্রোজেস্টেরন সমৃদ্ধ বিশেষ পিল। এদেরকে মিনিপিল বা মাইক্রোপিলও বলা হয়ে থাকে। অনেকে না জেনেই বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় সমন্বিত পিল খেয়ে বাচ্চাকে যেমন বঞ্চিত করেন তেমনি নিজেরও স্বাস্থ্যহানি ঘটান।
তবে মিনিপিল বা মাইক্রোপিলের ক্ষেত্রে বুকের দুধ কমার আশংকা বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমলেও এই পিলের কার্যক্ষমতা ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরনের সমন্বিত পিলের চেয়ে কম।
আরও কিছু সমস্যা-
আরও বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় পিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা জরুরি। এর মাঝে রয়েছে কিডনীতে কোন সমস্যা থাকলে, পিত্তথলির পাথর অপারেশন হয়েছে এমন ক্ষেত্রে, মাইগ্রেইনের সমস্যা থাকলে, খিঁচুনী বা মৃগী রোগ হলে, ডায়াবেটিস হলে, অনিয়মিত মাসিক বা মাসিকের সময় প্রচন্ড পেট ব্যথা থাকলে জন্মবিরতিকরণ পিল ব্যবহারে ডাক্তারের বিশেষ পরামর্শ অনুযায়ী জীবন-যাপন করা জরুরি।
আর হ্যাঁ, এই সব অবস্থাই মেয়েদের জন্মবিরতিকরণ পিলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পুরুষের জন্মবিরতিকরণ পিলও রয়েছে তবে তার কার্যক্ষমতা আর জনপ্রিয়তা এখনও খুব বেশি নয় বলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
সবশেষে এটুকুই বলার থাকে যে, অনেকেই অনেক সময় লজ্জাবোধ করে- ডাক্তারের কাছে না গিয়ে অন্য মানুষের কাছ থেকে জন্মবিরতির বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া কোন কাজের কথা হতে পারে না। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিন, সচেতন থাকুন, সুস্থ্ থাকুন!

Sunday, 26 January 2014

ভাত খাবার পর’ যা করতে মানা?



পৃথিবীর কমপক্ষে তিনশ কোটি মানুষের প্রধান খাবার ভাত ৷ বাংলাদেশীদেরও প্রধান খাবারও এই ভাত। স্বাস্থ্যরক্ষায় ভাত খাবার পর কিছু কাজ হতে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। নিজেকে সুস্থ্য রাখতে মেনে চলুন ওই পাঁচ পরামর্শ।

১. খাবার শেষের পর পরই তাৎক্ষণিকভাবে কোন ফল খাবেন না। এতে গ্যাসট্রিকের সমস্যা হতে পারে। ভাত খাওয়ার এক থেকে দুই ঘন্টা পর, কিংবা এক ঘন্টা আগে ফল খাবেন।

২. ধুমপান করবেন না। আপনি সারাদিনে অনেকগুলো সিগারেট খেলেও যতটুকু না ক্ষতি হয়, ভাত খাবার পর একটি সিগারেট বা বিড়ি তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি করবে আপনার শরীরের। ভাত খাবার পর একটা সিগারেট খাওয়া আর সার্বিকভাবে দশটা সিগারেট খাওয়া ক্ষতির বিবেচনায় সমান বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

৩. চা খাবেন না। চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ টেনিক এসিড থাকে যা খাদ্যের প্রোটিনের পরিমাণকে ১০০ গুণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে খাবার হজম হতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী সময় লাগে।

৪. বেল্ট কিংবা প্যান্টের কোমর ঢিলা করবেন না। খাবার পরপরই বেল্ট কিংবা প্যান্টের কোমর ঢিলা করলে অতি সহজেই ইন্টেসটাইন (পাকস্থলি) থেকে রেক্টাম (মলদ্বার) পর্যন্ত খাদ্যনালীর নিম্নাংশ বেকে যেতে পারে, পেঁচিয়ে যেতে পারে অথবা ব্লকও হয়ে যেতে পারে। এ ধরণের সমস্যাকে ইন্টেস্টাইনাল অবস্ট্রাকশন বলা হয়। কেউ বেশি খেতে চাইলে আগে থেকেই কোমরের বাধন লুজ করে নিতে পারেন।

৫. স্নান বা গোসল করবেন না। ভাত খাবার পরপরই স্নান করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে পাকস্থলির চারপাশের রক্তের পরিমাণ কমে যেতে পারে যা পরিপাক তন্ত্রকে দুর্বল করে ফেলবে, ফলে খাদ্য হজম হতে সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী লাগবে।

জানি লাইক দিবেন না। কারন আমাদের লিখার কোন মূল্য নেই আপনাদের কাছে। লাইক দেন বা নাই দেন আপনারা আমাদের পোস্টগুলো পড়ে উপকৃত হলেই আমাদের লিখা স্বার্থক। কারন আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য।

কিডনিতে পাথরের ধরনের ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা

পেছন কোমরে ব্যথা, বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণ—এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ল কিডনির পাথর। এরপর তা অনেককেই বিচলিত করে। চিকিৎসা না করলে ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকে এবং একসময় একেবারেই অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। এ কার্যক্ষমতা কমতে থাকা নির্ভর করে পাথরের ধরন, অবস্থান, আকৃতি এবং সঠিক চিকিৎসা ও পরবর্তী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর। তাই সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে কার্যক্ষমতা অনেকাংশে রোধ করা যায়।কারণকিডনিতে পাথর হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ, যেমন কিডনিতে বারবার সংক্রমণ এবং যথোপযুক্ত চিকিৎসা না করা, দৈনিক অল্প পানি গ্রহণ; খাবারে অধিক লবণ, অধিক আমিষ গ্রহণ এবং কম ফলফলাদি ও শাকসবজি খাওয়া, বেশি বা খুব কম ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার, জন্মগত ও বংশগত ত্রুটির জন্যও পাথর হতে পারে।
উপসর্গ
অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ না-ও থাকতে পারে। মাঝে মাঝে প্রস্রাবের সঙ্গে ছোট ছোট পাথর যাওয়া, হঠাৎ তলপেটে, নিচের পেটের দুই পাশে, বাঁ কোমরে তীব্র ব্যথা, রক্তবর্ণেও লাল প্রস্রাব, ব্যথা, জ্বালাপোড়া থাকতে পারে। বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে। হতে পারে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর।
চিকিৎসা
চিকিৎসানির্ভর করে পাথরের অবস্থান, আকার, ধরন, কিডনির কার্যকারিতা এবং প্রস্রাবের পথে প্রতিবন্ধকতার ওপর। কিছু ক্ষেত্রে পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার বা যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর ভেঙে বের করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার না করে ওষুধ সেবন করার মাধ্যমে পাথর বের করা বা পাথর আর বড় না হওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অস্ত্রোপাচারের পরও আবার পাথর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবন করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধ
 যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করবেন।
 বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে সতর্ক হোন।
 কখনোই প্রস্রাব আটকে রাখবেন না।
 লবণ কম, আমিষ মধ্যম পরিমাণে খেতে হবে।
 কালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজন ব্যতীত ক্যালসিয়াম ওষুধ ও ভিটামিন ডিযুক্ত ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
 বেশি অক্সালেটযুক্ত খাবার যেমন পালংশাক, বীট, মিষ্টি আলু, চা, চকলেট এবং সয়াজাতীয় খাদ্য পরিমিত খাবেন।
 শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে।
 মেডিসিন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতা

Thursday, 23 January 2014

কুমড়ায় ক্যান্সার কাট, ত্বকও ফিটফাট

কুমড়ায় ক্যান্সার কাট, ত্বকও ফিটফাট
সুস্বাস্থ্য ডেস্ক 
একজন মেয়ের সবচেয়ে বড় বন্ধু কে? ভরা সভায় কথাটা জিজ্ঞাসা করলেন এক ডাক্তার। সবাই অবাক, ত্বকের কথা বলতে গিয়ে কেন এই প্রশ্ন? কিছুক্ষণ পরেই উত্তর পাওয়ার পর সবাই মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন।

কুমড়াই কিনা মেয়েদের সবচেয়ে বড় বন্ধু হতে পারে। স্তন ক্যান্সার থেকে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা, হাড়ের জোর বাড়ানো থেকে শরীরে ভিটামিনের সঠিক জোগান- সবই মেলে এই নিত্যসাথী কুমড়া থেকে।
আসলে কুমড়াকে সেভাবে পাত্তা দেওয়ার রেওয়াজটা সেভাবে কারো মধ্যেই নেই। হাতের কাছে এমন জিনিস নিত্যই পাওয়া যায়। তাই বুঝি এই কুমড়ার পাত্তা নাই কারোর কাছে! কিন্তু এক নজরে দেখে নেওয়া যাক। তাহলেই বুঝবেন কেন আপনি কুমড়াকে এত পাত্তা দেবেন।

প্রথমেই দিব্যি বলে দেওয়া যায়, স্তন ক্যান্সার রক্ষা করতে কুমড়ার তুলনা নেই।

এমনকি রক্তের চাপ কমাতে, শিরা, পেশী, স্নায়ু ও হাড়কে সতেজ রাখতেও কুমড়ার জুড়ি মেলা ভার। হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচতে কুমড়ো অতি প্রয়োজনীয় জিনিস।

শীতকালে ত্বক শুস্ক থাকার কারণে নামি-দামি অনেক ক্রিম মাখছেন, কিন্তু ঔজ্বল্য ফিরছে না। আপনি কুমড়ার খোসা বেঁটে মাখুন। তারপর দেখুন আপনার ত্বক কী বলছে।
শীতকালে ত্বকে ভিটামিন এ-র অভাব ভীষণভাবে দেখা যায়। এই জন্য ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। কিন্তু কুমড়া এমন একটা সবজি যাতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এ উপাদান আপনার শরীরে ভিটামিন-এ-তে পরিণত হয়।

আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ভাইরাসজনিত রোগ থেকে রেহাই পেতে পারেন। নিয়মিত কুমড়া খেলে আলফা ক্যারোটিন, বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি, লোহা এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনও পেতে পারেন।

আপনার দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে গেলেও খেতে পারেন কুমড়া। কুমড়াতে ক্যারোটেনোয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (lutein and beta cryptoxanthin) থাকে, যা আপনার চোখের ছানি পড়ার হাত থেকে দূরে রাখে।

হার্ট অ্যাটাক : প্রয়োজন সাবধানতা

হার্ট অ্যাটাক : প্রয়োজন সাবধানতা
সুস্বাস্থ্য ডেস্ক 
হৃদপিণ্ডের কোনো অংশে, যেমন পেশীতে যদি অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়, তখন হার্ট অ্যাটাক হয়। যদি যথাসময়ে সেই রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা যায় তবেই আবার সব স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। আর যদি না যায়, তাহলে হৃদপিণ্ডের ওই অংশ সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে মানুষের মত্যু পয়ন্ত ঘটতে পারে।
উপসর্গ
হার্ট অ্যাটাকে সবার ক্ষেত্রে একই রকম উপসর্গ নাও হতে পারে। অনেক সময় কোনোরকম উপসর্গ ছাড়াই হার্ট অ্যাটাক হয়। একে নীরব হার্ট অ্যাটাক বলে।
তবে সাধারণত নিম্নোক্ত উপসর্গ দেখা যায়-
  • বুকে চাপ চাপ ব্যাথা বা এর আগে অন্য কোনো কারণে বুকব্যাথা থাকলে তার পরিবর্তন হওয়া এবং অন্য ধরনের ব্যাথা অনুভুত হওয়া। ব্যাথার স্থায়িত্বকাল কয়েক মিনিট হতে কয়েক ঘণ্টাও হতে পারে। ব্যথার তীব্রতা কম বা অনেক বেশিও হতে পারে। অনেক সময় পেটে গ্যাস হলে যেমন ব্যথা হয় এখানেও তেমন ব্যথা হতে পারে।
  • শরীরের উপরের অংশে অস্বস্তি অনুভুত হওয়া। এটা দুই হাত বা যে কোন একহাতে হতে পারে। এছাড়া পিঠে, ঘাড়ে, মুখের চোয়ালে, পেটের উপরের অংশে ব্যাথা হতে পারে।
  • বুক ব্যাথার সাথে সাথে বা তার আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া।
  • বমি বমি ভাব হওয়া।
  • ঘুমের সমস্যা হওয়া, তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই ক্লান্তি অনুভব।
হার্ট অ্যাটাক হবার সঙ্গে সঙ্গে করণীয়-
হাসপাতালে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন বা একজন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে, যেমন –
  • অক্সিজেন নেওয়া
  • অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়া
  • নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে নেওয়া
  • বুকের ব্যথার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া
  • উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমানোর জন্য ওষুধ খাওয়া
হার্ট অ্যাটাক একবার হয়ে যাবার পর করণীয়-
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও সুস্থ জীবনযাপনের অভ্যেস গড়ে তোলা। শাকসবজি, ফলমূল বেশি করে খাওয়া
  • ধূমপান সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করা
  • ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • প্রতিদিন খানিক সময় হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম করা

Monday, 20 January 2014

যে সকল সমস্যায় কালোজিরা বিশেষ ভাবে কার্যকর



১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে যে কোন জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে।
২. রক্তের শর্করা কমায়ঃ কালোজিরা ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা কমিয়ে ডায়াবেটিক আয়ত্তে রাখতে সহায়তা করে।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনঃ কালোজিরা নিন্ম রক্তচাপকে বৃদ্ধি এবং উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাসের মাধ্যমে শরীরে রক্তচাপ এর স্বাভাবিক মাত্রা সুনিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
৪. যৌন ক্ষমতাঃ কালোজিরা নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়ায়। এবং কালোজিরা সেবনে স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, ফলশ্রুতিতে পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সমূহ সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
৫. স্মরণ শক্তি উন্নয়নঃ কালোজিরা মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে তলতে সাহায্য করে।
৬. হাঁপানীঃ কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা সমাধনে সহায়তা করে।
৭. চুল পড়া বন্ধ করেঃ কালোজিরা চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌছে দিয়ে চুলপড়া বন্ধ করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৮. রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যাথাঃ কালোজিরা রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৯. মায়ের দুধ বৃদ্ধিঃ কালোজিরা মায়েদের বুকের দুধের প্রবাহ এবং স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
১০. শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিঃ কালোজিরা শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে।
১১. দেহের সাধারণ উন্নতিঃ নিয়মিত কালোজিরা সেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বস্থ্যের উন্নতি সাধন করে।

পোস্টে নিয়মিত লাইক না দিলে আমরা আপনার ওয়াল থেকে হারিয়ে যাবো। নতুন কিছু জানলে লাইক দিন। শেয়ার করে বন্ধুদের দেখান। নিজে জানুন, অন্যকেও জানান। আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের
কাম্য। ধন্যবাদ।

Sunday, 19 January 2014

প্র শ্নো ত্ত র

প্রশ্ন: সাধারণ ব্যথা ও প্রসব বেদনার মধ্যে কীভাবে ফারাক করা যায়?
উত্তর: গর্ভাবস্থার শেষ দিকে প্রায়ই পেট শক্ত হয়ে কিছু পেটব্যথা হয়। এই ব্যথা কিছু বিশ্রাম নিলে বা ওষুধ খেলে কমেও যায়। কিন্তু প্রসব বেদনা পেছন দিক থেকে সামনে বা তলপেটে শুরু হয়ে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর উঠতে থাকে। এর তীব্রতা কমে না বরং বাড়তেই থাকে আর দুই ব্যথার মধ্যবর্তী ফাঁকটুকুও কমতে থাকে। কোনো ওষুধে বা বিশ্রামে চলে যায় না। এমন হলে তবে বুঝতে হবে ব্যথা শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে পানি ভেঙে গেলে আর কোনো সন্দেহই থাকবে না। 
 ডা. রোনা লায়লা, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।

প্রশ্ন: নবজাতক শিশুর দিন-রাতের ঘুমচক্র ঠিক হতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর: জন্মের পর শিশুরা সাধারণত দুই থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা ঘুমায়। পাঁচ-ছয় মাস বয়স হওয়ার পর ঘুমের ছন্দে একটি পরিণত ভাব আসে। শিশুরা রাত জাগলে তাই ধৈর্য না হারিয়ে অপেক্ষা করুন। এমনিতে টানা চার ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকা পর্যন্ত শিশুকে জাগানো উচিত নয়। এর বেশি ঘুমালে হালকা সুড়সুড়ি দিয়ে জাগিয়ে বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। পেট ভরে গেলে সে আবারও নিবিড় ঘুমে তলিয়ে যাবে।  ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, শিশু বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

প্রশ্ন: রুটি ও নানরুটি খাওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি?
উত্তর: অবশ্যই আছে। বাড়িতে তৈরি রুটিতে আটা ও লবণ ছাড়া আর কিছুই নেই। আটায় আঁশ বা ফাইবারও বেশি। কিন্তু নানরুটি তৈরির সময় ময়দা, ঘি বা ডালডা, কলা ইত্যাদি মেশানো হয়। ময়দায় আঁশের পরিমাণও কম। তাই যাঁরা ওজন, শর্করা বা চর্বি কমাতে চান, তাঁদের জন্য হাতে বেলা রুটিই শ্রেয়। 
 আখতারুন নাহার, পুষ্টিবিদ, বারডেম।

প্রশ্ন: নবজাতকের জন্ডিস হলে কি বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে?
উত্তর: নবজাতক বা শিশুদের জন্ডিস অনেক কারণেই হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত রাখা যাবে না। শিশুকে নিয়মিত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে নবজাতকের ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক জন্ডিসের মূল চিকিৎসাই হচ্ছে শিশুকে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত বুকের দুধ খাওয়ানো।
 ডা. মো. মাহবুবুল আলম, ঢাকা শিশু হাসপাতাল

প্রশ্ন: মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, এই ধারণা কি ঠিক? 
উত্তর: মাসিক বন্ধ হওয়ার সঙ্গে মোটা হওয়ার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হরমোনের মাত্রা কমে যায়। এ কারণে হূদেরাগের ঝুঁকি বাড়ে। তা ছাড়া এই বয়স, অর্থাৎ ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বি বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ সময় খাদ্যনিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে সঠিক ওজন বজায় রাখা উচিত।  ডা. রোনা লায়লা, বারডেম হাসপাতাল।

নিয়ম মেনে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সেবন জরুরি


..অ্যালার্জি, র্যাশ, হাঁপানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম আর্থ্রাইটিস রোগে প্রায়ই ব্যবহূত হয় স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ। এ ছাড়া হঠাৎ অজ্ঞান হলে কিংবা রক্তচাপ কমে গেলেও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে ব্যবহূত হয় এই স্টেরয়েড। বাজারে প্রচলিত মোটা হওয়ার ওষুধ, ব্যথা-বেদনা কমানোর টোটকা ইত্যাদিতেও রয়েছে এই স্টেরয়েড।
করটিসন, হাইড্রোকরটিসন, প্রেডনিসলন, ডেক্সামিথাসন ইত্যাদি বিভিন্ন নামে স্টেরয়েড ট্যাবলেট, ক্রিম-অয়েন্টমেন্ট, ইনজেকশন, সেপ্র, ইনহেলার রয়েছে। বিভিন্ন সমস্যায় চিকিৎসকেরা এসব ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে দিয়ে থাকেন। কিন্তু বহুরোগ উপশমকারী এবং জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধ একেবারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত নয়। প্রায়ই দেখা যায় যে সঠিক ও নিয়মিত পরামর্শের অভাবে স্টেরয়েড ব্যবহারকারী রোগীরা বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত হন।
তাই জেনে নেওয়া উচিত যে এই ওষুধের অতি ব্যবহার, অপব্যবহার বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের কারণে কী কী সমস্যা হতে পারে ও তার প্রতিকার কী?
  দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে ওজন বৃদ্ধি পায়, উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় বা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, রক্তে শর্করা বাড়ে।
 মুখ, গলা, ঘাড়, বুকে-পেটে চর্বি জমে।
 হাত-পায়ের মাংসপেশি শুকিয়ে আসে এবং পেশির দুর্বলতা দেখা দেয়।
 গ্লুকোমার অবনতি বা চোখের ছানিজনিত দৃষ্টিশক্তির অবনতি ঘটে।
 বিষণ্নতা, কখনো বা অস্থিরতা এবং ঘন ঘন মেজাজের তারতম্য ঘটে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে বারবার সংক্রমণ হয়।
 কাটা-ছেঁড়া বা ক্ষত সারতে দেরি হয়।
 হাড়ের ঘনত্ব কমে ও অস্টিওপেরোসিস হয়ে সহজে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়।
মেয়েদের মাসিকের জটিলতা, মুখে বা শরীরে অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধি।
 চুল পড়া বাড়ে, ত্বক পাতলা হয়ে যায়, তলপেটে ফাটা দাগ হয়, ব্রণও বেশি হয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, স্টেরয়েড ওষুধ সেবন করার কারণে দেহের স্বাভাবিক স্টেরয়েড হরমোন নিঃসরণের ছন্দপতন ঘটে। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থির মাধ্যমে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিও আর প্রয়োজনমাফিক হরমোন তৈরি করতে পারে না। অর্থাৎ রোগী স্টেরয়েড নির্ভর হয়ে পড়ে। হঠাৎ ওষুধ ছেড়ে দিলে বা ভুলে গেলে বমি, দুর্বলতা, পেট ব্যথা, রক্তে লবণের তারতম্য, রক্তচাপ কমে গিয়ে হঠাৎ অজ্ঞান হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
তাই স্টেরয়েড সেবনের আগে ভালোভাবে জেনে রাখুন:
-হঠাৎ বেড়ে যাওয়া শ্বাসকষ্ট বা ব্যথা, অ্যালার্জি কমাতে যে স্টেরয়েড দেওয়া হয় তা সাময়িক ও দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য নয়। চিকিৎসকের কাছ থেকে এর মাত্রা ও মেয়াদ ঠিকভাবে জেনে নিন
-আর্থ্রাইটিস বা ইমিউন সিস্টেমের জটিলতায় দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা হলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যথাসম্ভব কমানোর বিষয়ে পরমর্শ নিন। যেমন তিন মাসের বেশি ব্যবহারে হাড় ক্ষয় কমানোর ওষুধ ব্যবহার, রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা মেপে বারবার এসবের ওষুধ ঠিক করে নেওয়া ইত্যাদি।
-যাঁরা দীর্ঘদিন এ ধরনের ওষুধ সেবন করছেন, তাঁদের ধাপে ধাপে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ কমিয়ে আনতে হবে, কোনোভাবেই একবারে ওষুধ বন্ধ করা যাবে না।  মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল।

বাড়তি ওজনের ছোট-বড় যত সমস্যা

বাড়তি ওজনের ছোট-বড় যত সমস্যাস্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের জন্য নানা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ, এটা এখন সবাই জানেন। বাড়তি ওজন মানেই শরীরে মেদের আধিক্য, ফলাফল হূদেরাগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে চর্বি জমা ইত্যাদি কারও অজানা নয়। তাই বর্তমান সময়ে এসব প্রাণঘাতী রোগের প্রকোপ ও ঝুঁকি কমাতে বিজ্ঞানীরা সঠিক ওজন বজায় রাখার দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু ওজনাধিক্যের সঙ্গে আরও নানা ছোট-বড় সমস্যা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, যেগুলো নিয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয় না। আসুন, জেনে নিই বাড়তি ওজনের কারণে আমাদের আরও কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে। 
: অস্টিওআথ্রাইটিস বা বাতের প্রধানতম কারণ হলো ওজনাধিক্য। অতিরিক্ত ওজন বহন করার কারণে মূলত হাঁটু, কোমর বা মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দেয়। কখনো মেরুদণ্ডে হাড় বিচ্যুত হয়ে স্নায়ুকে চাপ দেয়। এ কারণে এমনকি শল্য চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে। এ ছাড়া স্থূল শরীরে গেঁটে বাত বা গাউট, রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি, কবজির স্নায়ুতে চাপ পড়ার কারণে কার্পাল টানেল সিনড্রোম ইত্যাদি সমস্যাও বেশি হয়ে থাকে। 
: পেটের পেশির সংকোচন-প্রসারণ দুর্বল হয়ে পড়ে ও হার্নিয়ার ঝুঁকি বেশি। কোনো অস্ত্রোপচারের পর সেই সেলাইয়েও সহজে হার্নিয়া হয়ে যেতে পারে। 
: পায়ের শিরা ফুলে নীল হয়ে ওঠার অপর নাম ভেরিকোস ভেইন। এটি ওজনাধিক্য ব্যক্তিদের বেশি হয়।
: পিত্তথলিতে পাথর হওয়া ওজনাধিক্য ব্যক্তিদের ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ স্থূল নারীদের এই ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া পেটের খাদ্য খাদ্যনালিতে উঠে আসা বা রিফ্লাক্সের কারণও ওজনাধিক্য। যকৃতে চর্বি জমা যা ফ্যাটি লিভার নামে পরিচিত তা ওজনাধিক্যের একটি সাধারণ সমস্যা। এমনকি গবেষণায় দেখা গেছে, অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও স্থূলতা দায়ী।
: ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র সাধারণ লোকের তুলনায় বেশি হয়। আবার ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে, তার সঙ্গে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতাগুলোও বেশি মাত্রায় দেখা দেয়। 
: স্থূল শরীরের ব্যক্তিরা বেশি নাক ডাকে। রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে শ্বাস আটকে আসা বা স্লিপ এপনিয়ার প্রধান কারণ স্থূলতা। এ ছাড়া সামান্য পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়াও একটি সমস্যা। 
: জরায়ুতে সিস্ট ও উর্বরতা হ্রাসের কারণ হিসেবে স্থূলতা দায়ী। এ ছাড়া স্তন ক্যানসার ও ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকির সঙ্গেও স্থূলতার সম্পর্ক রয়েছে। 
: ত্বকের নানা সমস্যা যেমন ত্বকের রং কালো হয়ে যাওয়া বা অ্যাকানথোসিস নাইগ্রিক্যানস, ত্বকের কুঁচকিতে সংক্রমণ, যেমন ক্যানডিডা সংক্রমণ এবং লসিকানালিতে পানি জমা—এসব স্থূল শরীরের ব্যক্তিদেরই সমস্যা। 
: স্থূলতার সঙ্গে মানসিক সমস্যারও সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে। বিষণ্নতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব বা সামাজিকভাবে হেয় হওয়া ইত্যাদি স্থূলতার সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। 
অস্টিওআথ্রাইটিস বা বাত
অতিরিক্ত ওজন বহন করার কারণে মূলত হাঁটু, কোমর বা মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দেয়।
হার্নিয়ার ঝুঁকি
পেটের পেশির সংকোচন-প্রসারণ দুর্বল হয়ে পড়ে ও হার্নিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
জরায়ুতে সিস্ট
জরায়ুতে সিস্ট ও উর্বরতা হ্রাসের কারণ হিসেবে স্থূলতা দায়ী। এ ছাড়া স্তন ক্যানসার ও ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকির সঙ্গেও স্থূলতার সম্পর্ক রয়েছে।
পিত্তথলিতে পাথর
পিত্তথলিতে পাথর হওয়া ওজনাধিক্য ব্যক্তিদের ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব স্থূল নারীদের এই ঝুঁকি বেশি।
নাক ডাকা
স্থূল শরীরের ব্যক্তিরা বেশি নাক ডাকে। ঘুমের মধ্যে শ্বাস আটকে আসা বা স্লিপ এপনিয়ার প্রধান কারণ স্থূলতা।
 ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

জেনে নিন গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম

জেনে নিন গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামজেনে নিন গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামগর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করাই যাবে না—এমন কোনো কথা নেই। বরং এই সময়ে যত বেশি কর্মক্ষম থাকা যায়, ততই ভালো। জেনে নিন গর্ভকালীন ব্যায়াম কেন ভালো?
হালকা ব্যায়াম
- মা ও শিশুর মধ্যে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
- কোমর, পা ইত্যাদি ব্যথার উপশমে সাহায্য করে, সন্ধি, লিগামেন্ট, পেশিকে শিথিল করে।
- কাজে উদ্যম আনে, ফিটনেস বাড়ায়
- অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থেকে বাঁচায়
- পরিপূর্ণ ও গভীর ঘুমে সাহায্য করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি দূর করে
- পায়ের রক্তনালি ফুলে ওঠা দূর করে
- স্বাভাবিক প্রসবে সাহায্য করে।
ব্যায়াম শুরুর আগে জেনে নিন
ব্যায়াম শুরুর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার গর্ভাবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। নানা কারণে চিকিৎসক আপনাকে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলতে পারেন, সে সময় ব্যায়াম করা যাবে না।
-আপনি যদি আগে থেকেই কিছু হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়ামে অভ্যস্ত থাকেন, তবে তা চালিয়ে নিতে পারেন। তবে পেটের ওপর চাপ পড়ে এমন কোনো ব্যায়াম করা যাবে না। একজন অভিজ্ঞ ব্যায়াম প্রশিক্ষক, যিনি গর্ভকালীন ব্যায়াম সম্পর্কে জানেন—এমন কারও কাছে পরামর্শ নিতে পারেন।
-ব্যায়ামের সময় হালকা ও ঢিলেঢালা আরামদায়ক সুতির পোশাক পরুন। পায়ের জুতা নরম ও মাপমতো হওয়া চাই।
-প্রথমে খানিকটা হালকা ধরনের ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। হাঁপিয়ে ওঠার মতো বা কষ্টকর ব্যায়াম দরকার নেই। প্রয়োজনে গতি কমান। অস্বস্তি, খারাপ লাগা থাকলে ব্যায়াম বন্ধ করুন।
-ব্যায়ামের দুই ঘণ্টা আগে দুই গ্লাস পানি পান করবেন, ১৫ মিনিট পরও দুই গ্লাস।
-ধীরে অবস্থান পরিবর্তন করুন, যেন ভারসাম্য না হারায়। শেষে হালকা হাঁটাহাঁটি করুন, তারপর কিছুটা বিশ্রাম নিন।
ব্যায়াম নিষেধ
উচ্চ রক্তচাপ, রক্তশূন্যতা, হূৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগ, গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ, ফুল নিচের দিকে থাকা বা প্লাসেন্টা প্রিভিয়া থাকলে ব্যায়াম নিষেধ। আগে গর্ভপাত হওয়ার ইতিহাস থাকলেও ঝুঁকি নেবেন না। ডাইভিং, জিমন্যাস্টিক, হকি, কারাতে, সাইক্লিং, নেট বল প্র্যাকটিস বা পাহাড়ে ওঠা জাতীয় পরিশ্রম গর্ভাবস্থায় করা যাবে না।
নিরাপদ ব্যায়াম
১ সম্পূর্ণ গর্ভকালীন সময়েই হাঁটাহাঁটি করা যায়। দিনে আধা ঘণ্টা হাঁটাই যথেষ্ট।
২ দিনে ১৫ মিনিট জগিংও করতে পারেন, তবে বেশি হয়রান লাগলে ধীরে হাঁটুন।
৩ গর্ভাবস্থায় সাঁতার খুবই নিরাপদ ও ভালো ব্যায়াম এবং এতে দেহের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি, লিগামেন্ট ইত্যাদির ব্যথা কমে।
৪ গর্ভাবস্থার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী কিছু যোগব্যায়াম বা আসন আছে, যা প্রশিক্ষকের কাছে শিখে নিতে পারেন।
 স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।

ওজন বাড়ে যত ওষুধে

ওজন বাড়ে যত ওষুধেচিকিৎসার প্রয়োজনে অনেক ওষুধই আমাদের খেতে হয়। এর মধ্যে কিছু ওষুধ মোটা হওয়ার জন্য দায়ী। যাঁরা মোটা হচ্ছেন, দরকার হলে চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে জেনে নিন।
স্টেরয়েড ও হরমোন: সম্ভবত সবচেয়ে বেশি এ ঘটনাটি দেখা যায় স্টেরয়েড নিয়ে। স্টেরয়েড একটি ধন্বন্তরি ওষুধ। বিশেষ করে হাঁপানি বা অ্যালার্জি হঠাৎ বেশি বেড়ে গেলে, প্রচণ্ড ব্যথা-বেদনা কমাতে কিংবা ত্বকের ও হাড়সন্ধির নানা সমস্যায় চিকিৎসকেরা স্টেরয়েড দিয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ ওষুধ হয়তো কয়েক দিনের জন্য খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীরা উপশম পেয়ে বারবার বা একটানা দীর্ঘদিন খেতে থাকেন। ফলে ওজন বাড়তে থাকে। বাজারে প্রচলিত অনেক হারবাল, টোটকা বা ভেষজ ওষুধ আসলে কিছুই নয়, এই স্টেরয়েড। তাই এসব থেকে সাবধান।
খেলোয়াড় ও অ্যাথলেটরা শক্তি বাড়ানোর জন্য টেস্টোস্টেরন বা নানা ধরনের হরমোন সেবন করেন, সেগুলো ওজন বাড়ায়। ওজন বাড়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও। তবে বর্তমানে যেসব স্বল্পমাত্রার বড়ি বা কেবল ইস্ট্রোজেন বড়ি পাওয়া যায়, তাতে এ ওজন বাড়ার হার কম।
ডায়াবেটিসের ওষুধ: সালফোনাইলইউরিয়া ও গ্লিটাজন গ্রুপের ডায়াবেটিসের ওষুধ রোগীর ওজন বাড়ায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে এমনিতেই ওজনাধিক্য একটি বড় সমস্যা, তাই স্থূল রোগীদের এসব ওষুধের বিকল্প খোঁজা উচিত। কেননা, একই সঙ্গে ওজন কমায় ও কার্যকর নানা নতুন ওষুধ, যেমন মেটফরমিন, ডিপিপি ৪ ইনহিবিটর ইত্যাদি এখন বাজারে রয়েছে। ইনসুলিনও ওজন বাড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত। এখানেও ওজন কম বাড়ায় এমন আধুনিক অ্যানালগ ইনসুলিনের কথা ভাবতে পারেন।
মানসিক রোগের ওষুধ: বিষণ্নতার নানা ওষুধ, মানসিক রোগ ও মৃগীরোগের বিভিন্ন ওষুধও ওজন বাড়ায়। যেমন অ্যান্টিডিপ্রেশেন্ট, সোডিয়াম ভ্যালপ্রোয়েট বা লিথিয়াম। কিন্তু প্রয়োজনে এ ধরনের ওষুধ আপনাকে খেতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য অন্য দিকে সচেষ্ট হোন।
একটা ধারণা আছে যে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি খেলে ওজন বাড়ে, কিন্তু আসলে তা নয়। এসব ওষুধের সঙ্গে ওজন বাড়ার সম্পর্ক নেই। সব ধরনের ঘুমের ওষুধেও ওজন বাড়ে না। আর ওজন বাড়ার জন্য হয়তো আপনার জীবনাচরণই বেশি দায়ী, সে দিকটাও লক্ষ করুন।
 হরমোন ও ডায়াবেটিস বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।

গর্ভকালীন ৫ সাধারণ সমস্যা


গর্ভাবস্থায় দরকার সুষম খাবারমা হওয়ার সময় একটি মেয়ের শরীর ও মনে ঘটে নানা স্বাভাবিক পরিবর্তন ও প্রতিক্রিয়া। প্রায় প্রতিটি মেয়েরই এমন কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, যা সহজে মানিয়ে নেওয়ার জন্য চাই কিছু বাড়তি যত্ন। চলুন জেনে নিই এমন পাঁচটি পরিচিত সমস্যার কথা।
সকালে...
সকালবেলা বিছানা ছাড়ার পরই প্রচণ্ড বমি ভাব, বমি, মাথা ঘোরা—এই উপসর্গের নাম মর্নিং সিকনেস। প্রথম সন্তান ধারণের সময় এটি বেশি হয় এবং দেখা দেয় প্রথম ও দ্বিতীয় মাসেই, তিন মাসের পর সাধারণত সেরে যায়। ২৫ শতাংশ নারীর এই সমস্যা একেবারে নাও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় রক্তে কিছু হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াই এর কারণ। 
মর্নিং সিকনেস থেকে রক্ষার উপায়
১. সকালে একবারে বেশি কিছু না খেয়ে অল্প অল্প করে শুকনো খাবার, যেমন টোস্ট বিস্কুট ও আমিষসমৃদ্ধ খাবার খান।
২. তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, যে খাবার দেখলে বা খেলে বমির উদ্রেক হয় তাও এড়িয়ে চলুন।
৩. চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে পারেন।
৪. অতিরিক্ত বমি হলে বা পানিশূন্যতা বা লবণশূন্যতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
পায়ে পানি আসা
গর্ভাবস্থায় পায়ে অল্প পানি জমাটা স্বাভাবিক। এ জন্য আতঙ্কিত হওয়ার বা চিকিৎসা নেওয়ারও কিছু নেই। 
১. বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকবেন না, পায়ের নিচে মোড়া বা টুল দিন।
২. খাবারে অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলুন। 
৩. বিশ্রাম বা ঘুমের সময় পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন।
৪. পা অনেক বেশি ফুলে গেলে, যদি দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, মাথা ব্যথা হয় বা রক্তচাপ বেড়ে যায় তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
কোমর ব্যথা
৫০ শতাংশ মেয়ে কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হয়। ওজন বৃদ্ধি ও অস্থিসন্ধির শিথিলতা এর জন্য দায়ী। তবে উঁচু হিলের জুতা পরা, প্রস্রাবে সংক্রমণ বা কোষ্ঠকাঠিন্যও এর কারণ হতে পারে। পা উঁচু করে বিশ্রাম নিলে কিছুটা আরাম পাবেন। সঠিক ভঙ্গিতে শোয়া বা বসা, শক্ত বিছানা ব্যবহার করা, কোমরে মালিশ বা সেঁক এবং বেশি ব্যথা হলে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে পারেন।
ঘন ঘন প্রস্রাব
৮ থেকে ১২ সপ্তাহে এই বিরক্তিকর সমস্যা দেখা দেয়। জরায়ুর আকার বড় হওয়ার কারণে মূত্রথলিতে চাপ দেয় বলে এমন ঘটে। ১২ সপ্তাহের পর সেরে গেলেও শেষ দিকে শিশুর মাথা নিচে নামতে শুরু করলে মূত্রথলিতে চাপ দিলে আবার দেখা দেয়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা তলপেটে ব্যথা না থাকলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
পেট শক্ত হয়ে আসা
মাঝেমধ্যে পেশির সংকোচনের জন্য পেট শক্ত হয়ে আসে। সাধারণত ব্যথা থাকে না এবং একটু পর নিজেই চলে যায়। তবে ব্যথা যদি থাকে ও তীব্রতা বাড়তে থাকে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য বা প্রস্রাবে সংক্রমণ থাকলে চিকিৎসা করুন।  বারডেম হাসপাতাল।

অহেতুক ভীতি দূর করে সুস্থ থাকুন

২০ বছর ধরে লিফটে চড়েন না ব্যাংকার হাবিবউল্লা। ২০ বছর আগে এক অফিসে লিফটে চড়ার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। ১৫ মিনিটের জন্য ভেতরে আটকা পড়েন তিনি। এর পর থেকে লিফটের প্রতি প্রচণ্ড এক ভীতি জন্মায় তাঁর। তাঁর বিশ্বাস, লিফটে উঠলেই একসময় তা বন্ধ হয়ে যাবে এবং তিনি আর কখনোই বের হতে পারবেন না। 
এরপর তিনি একবারই লিফটে চড়েছিলেন। তারপর হূৎপিণ্ডটা যেন লাফাতে শুরু করেছিল, দম বন্ধ হয়ে আসছিল, মনে হচ্ছিল মারা যাবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি পদোন্নতি প্রত্যাখ্যান করেছেন, কেননা তাহলে তাঁকে বসতে হবে ১০ তলায় এবং লিফট ব্যবহার করতে হবে।
ভয় যখন অস্বাভাবিক
নির্দিষ্ট বস্তু, বিষয় বা পরিস্থিতিতে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ভয় গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এই ভয়ের অনুভূতি যদি স্বাভাবিকতার সীমা অতিক্রম করে তখন তা একটি রোগ। একে বলে ফোবিয়া বা ফোবিক ডিজঅর্ডার বা অহেতুক ভীতি রোগ। অনেকে বিভিন্ন প্রাণী যেমন—কুকুর, সাপ, টিকটিকি, তেলাপোকা, মাকড়সা ইত্যাদি অতিরিক্ত ভয় পান। কারও ভীতি বিভিন্ন প্রাকৃতিক অবস্থা যেমন—উচ্চতা, ঝড়, সমুদ্র, পাহাড় ইত্যাদিকে। কেউ আবার রক্ত, ক্ষত, ইনজেকশন—এসব দেখলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন ভয়ে। 
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যেমন— বিমানে চড়তে, লিফটে উঠতে, বদ্ধ স্থানে অনেকের ভীতি জন্মায়। কেউ একা থাকলে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কেউ আবার অনেক জনসমাগমের মধ্যে ফোবিয়ায় আক্রান্ত হন, দম বন্ধ হয়ে আসে। আক্রান্ত ব্যক্তির এই অস্বাভাবিক পর্যায়ের ভয় তাঁর ব্যক্তিগত, সামাজিক ও কর্মজীবনে ব্যাঘাত ঘটায়। বিষয়টি সেই মানুষ এড়িয়ে চলেন যেকোনোভাবে।
ভয় পেলে যা হয়
আক্রান্ত ব্যক্তির কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন—হাত-পা কাঁপা, মুখ শুকিয়ে আসা, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট, দম বন্ধ ভাব, বুকের মাঝে চাপ, ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, ক্লান্তি, মাথা ঝিম ঝিম করা, মাথা ঘোরা, পেটের মধ্যে অস্বস্তি, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা বমি ইত্যাদি। 
চিকিৎসা কী?
ফোবিয়া একধরনের মানসিক রোগ এবং এর মূল চিকিৎসা হলো সাইকোথেরাপি, বিশেষত বিহেভিয়ার থেরাপি। এই থেরাপিতে ব্যক্তির অনাকাঙ্ক্ষিত বা অস্বাভাবিক আচরণকে ধীরে ধীরে চর্চা ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষিত আচরণে পরিবর্তিত করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উদ্বেগের শারীরিক-মানসিক উপসর্গ কমাতে ওষুধ ব্যবহারেরও প্রয়োজন হতে পারে।  জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।

প্রশ্ন:QQQQQQQQQQQQQQQQQQQ

প্রশ্ন: করলা, চিরতার রস, ঘৃতকুমারীর রস ইত্যাদি খেলে কি রক্তে শর্করা বা চর্বি কমে?
উত্তর: এ ধরনের সবজি বা লতাপাতার ভেষজ গুণের জন্য ডায়াবেটিক, উচ্চরক্তচাপ ও রক্তে চর্বির আধিক্য আছে, এমন রোগীরা প্রায়ই সেবন করে থাকেন। তবে এসব উপকার পেতে কতটুকু মাত্রায় বা কতবার খেতে হবে তার কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত নেই। অতিমাত্রায় কোনো ভেষজ উদ্ভিদের উপাদান যকৃত বা কিডনির জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই কোনো কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। আর দশটা সবজি খাওয়ার মতো করে এগুলোও গ্রহণ করা যাবে, তবে ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের কোনো দিক নির্দেশনা এখনো নেই।  আখতারুন নাহার, পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল।

প্রশ্ন: চোখের সমস্যার কারণে কি মাথা ব্যথা হতে পারে?
উত্তর: অনেক কারণেই মাথা ব্যথা হতে পারে। দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা থাকলে মানুষকে কষ্ট করে দেখতে হয় বলে চোখ ব্যথা হয়। সেখান থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে মাইনাস পাওয়ারের সমস্যায় দূরের জিনিস দেখতে ও প্লাস পাওয়ারের সমস্যায় কাছের জিনিস দেখতে বা পড়তে গেলে মাথা ব্যথা হতে পারে। শিশুদের বেলায় স্কুলের পর বা বাড়িতে পড়াশোনার পর চোখ ও মাথা ব্যথা করলে বা পাঁচ বছর বয়সের নিচে মাথা ব্যথা হলে অবশ্যই চোখ পরীক্ষা করানো উচিত। 
 ডা. হারুন-উর-রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

প্রশ্ন: উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কি প্রতিদিন রক্তচাপ মাপতে হবে?
উত্তর: না, প্রতিদিন রক্তচাপ মাপার প্রয়োজন নেই। রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে প্রথম দিকে এক দিন পরপর, পরে সপ্তাহে এক দিন এবং পরবর্তী সময়ে দুই সপ্তাহে একবার বা মাসে একবার রক্তচাপ মাপা উচিত। আর উচ্চ রক্তচাপ কখনোই সেরে যাবে না, তবে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পর নিয়মিত এক মাস বা দুই মাস পরপর রক্তচাপ মেপে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করা উচিত।
 ডা. গোলাম ফাহাদ ভূঁইয়া, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতা

প্রশ্ন: শিশুদের প্যারাসিটামল মুখে খাবার সিরাপ ও পায়ুপথে ব্যবহারের সাপোজিটরির মধ্যে কার্যকারিতার পার্থক্য আছে কি?
উত্তর: নেই। দুটোই একই উপাদান, অর্থাৎ এসিটামিনোফেন দিয়ে তৈরি। কেবল দেহে প্রবেশের পথটি আলাদা। অনেকের ধারণা, সাপোজিটরি সিরাপের চেয়ে বেশি কার্যকর। জ্বর বেশি হলে সিরাপ না দিয়ে সাপোজিটরি দেওয়া উচিত। কিন্তু আসলে কার্যকারিতা বা নিরাপত্তার দিক দিয়ে সিরাপ বা সাপোজিটরি একই ধরনের। তবে কোনো শিশু যদি বারবার বমি করে ওষুধ ফেলে দেয় বা গিলতে না পারে, সে ক্ষেত্রে মুখে খাবার সিরাপের বদলে সাপোজিটরি ব্যবহারই শ্রেয়।  ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।